বাংলাদেশ অনলাইন : | রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
ছবি : সংগৃহীত
পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে বড় মঙ্গলের খণ্ডটি এবার নিলামে উঠছে। নিউইয়র্কের বিখ্যাত নিলাম প্রতিষ্ঠান সোথবি’স আগামী ১৬ জুলাই এটি নিলামে তুলবে। ‘এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮’ নামে পরিচিত এই বিরল উল্কাপিণ্ডটির ওজন ২৫ কেজির বেশি এবং প্রস্থ ১৫ ইঞ্চি। এটি এখন পর্যন্ত পাওয়া মঙ্গলের যে কোনো উল্কাপিণ্ডের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বড়।
২০২৩ সালে নাইজারের প্রত্যন্ত আগাদেজ অঞ্চলে উল্কাটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। এটি প্রায় ২২৫ মিলিয়ন মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। এই মঙ্গল-পাথরের মূল্য ৪০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৯ কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোথবি’স জানিয়েছে, পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত স্বীকৃত ৭৭ হাজার উল্কাপিণ্ডের মধ্যে মাত্র ০.৬ শতাংশই মঙ্গলগ্রহ থেকে আগত বলে শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ৪০০টি মঙ্গল-পাথর পাওয়া গেছে। আর ‘এনডব্লিউএ ১৬৭৮৮’ একাই সেই সব খণ্ডের প্রায় ৬.৫ শতাংশের সমান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কোনো এক বিশাল গ্রহাণু আঘাতের ফলে মঙ্গল থেকে মহাশূন্যে ছিটকে পড়েছিল ধ্বংসাবশেষ। এটি তারই একটি অংশ। খণ্ডটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে সাহারা মরুভূমিতে আছড়ে পড়েছিল।
সোথেবি’স-এর বিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ক্যাসান্দ্রা হ্যাটন বলেছেন, ‘এটি শুধু একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার নয়, বরং মঙ্গলের রহস্য উদ্ঘাটনের এক অনন্য তথ্যভান্ডার।’ তিনি জানান, এটি পৃথিবীতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ছিল অত্যন্ত ক্ষীণ।
এই পাথরের ওপরের ভাগে ক্ষয় হওয়ার চিহ্ন খুবই কম দেখা যায়। অর্থাৎ এটি তুলনামূলক নতুনভাবেই পৃথিবীতে এসেছে। তবে বিজ্ঞানীদের একটি অংশ পাথরটির নিলাম নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁরা মনে করেন—এত মূল্যবান গবেষণাসামগ্রী যদি কোনো ধনকুবেরের ব্যক্তিগত সংগ্রহে চলে যায়, তাহলে জনসাধারণ ও বিজ্ঞানচর্চা উভয়ের জন্যই তা হবে এক অপূরণীয় ক্ষতি।
এডিনবরার ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিদ অধ্যাপক স্টিভ ব্রুসাট বলেছেন, ‘এটি একটি জাদুঘরে থাকা উচিত—যেখানে মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা এটি দেখতে ও জানতে পারবে।’
পাথরটি ১৫ জুলাই পর্যন্ত নিউইয়র্কে সোথবি’স গ্যালারিতে জনসাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ১৬ জুলাইয়ের নিলামে আরও থাকবে প্রাচীন জীবাশ্ম, ডাইনোসরের কঙ্কাল ও দুর্লভ ভূতাত্ত্বিক নিদর্শন।
Posted ১০:২৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh